৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৫
`

ট্রাম্পের আশ্বাসে টিকটক ফিরলেও রয়েছে অনিশ্চয়তা

ট্রাম্পের আশ্বাসে টিকটক ফিরলেও রয়েছে অনিশ্চয়তা -

যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারকারীর সংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। মার্কিন তরুণ-তরুণীদের মধ্যে অ্যাপটির জনপ্রিয়তা অস্বাভাবিক। তারা খবরাখবর পেতে, বিনোদনের খোঁজে ও অর্থ উপার্জনে দিনের বড় একটা সময় টিকটকে ডুবে থাকেন। আগে কখনো যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সামাজিকমাধ্যম নিষিদ্ধ করা হয়নি। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে নিষেধাজ্ঞার মুখে কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল টিকটক। তবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই চীনা মালিকানাধীন জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে পুনরায় বৈধভাবে কার্যক্রম শুরু করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিজের প্রথম মেয়াদে টিকটক নিষিদ্ধে নেওয়া উদ্যোগের নেতৃত্বে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। দ্বিতীয় মেয়াদে আকস্মিকভাবে সেই তিনিই এই ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপটি রক্ষার ভূমিকায় আবির্ভূত হয়েছেন। যদিও টিকটককে একেবারে স্বস্তি না দিয়ে অনিশ্চয়তায় রেখে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। গত সোমবার শপথ নেওয়ার পর টিকটক নিষেধাজ্ঞার আইন কার্যকরে আরও ৭৫ দিন বিলম্ব করতে একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন তিনি। এ সময়ে ট্রাম্প এই আভাসও দিয়েছেন যে, অ্যাপটি যুক্তরাষ্ট্রে সচল রাখতে হলে দেশটির সরকারকে অর্ধেক মালিকানা দিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট টিকটকের বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে মূলত জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কারণে। কারণ চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের তথ্য চীন সরকারের কাছে দিতে পারে বলে তারা আশঙ্কা করছে। মার্কিন সরকার মনে করে, চীনের জাতীয় নিরাপত্তা আইন অনুযায়ী বাইটড্যান্স চীনা সরকারের কাছে তথ্য সরবরাহে বাধ্য, যা মার্কিন নাগরিকদের গোপনীয়তার জন্য হুমকিস্বরূপ। টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সমালোচনা করে ইলন মাস্ক জানান, টিকটক যুক্তরাষ্ট্রে অবাধে চালু থাকলেও চীনে এক্স নিষিদ্ধ থাকা অসামঞ্জস্যপূর্ণ। এ সিদ্ধান্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নীতির প্রতি দ্বৈত আচরণ নির্দেশ করে। প্রযুক্তিবিশ্বে গুঞ্জন রয়েছে, ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ব্যবসা কিনে নিতে পারেন। এমনকি চীনের পক্ষ থেকেও মাস্কের এক্স প্ল্যাটফর্মকে অংশীদার করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে ট্রাম্প বলেছেন, টেসলা প্রধান ইলন মাস্ক ও ওরাকল প্রধান ল্যারি এলিসন চাইলে টিকটক কিনে নেয়ার বিষয়ে যদি আগ্রহী হন তাহলে এক্ষেত্রে তার কোনো আপত্তি নেই।
মাস্ক টিকটিক কিনবেন কিনা সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেছেন, মাস্ক প্ল্যাটফর্মটি কিনতে চাইলে আমি সেই পথ খুলে দেবো। বেইজিং টিকটক বিক্রির অনুমতি দিতে অস্বীকার করলে চীনা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হবে বলেও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প।
যুক্তরাষ্ট্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টিকটক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে দেশটিতে এর কার্যক্রম আবার শুরু হলেও যারা অ্যাপটি মুছে ফেলেছিলেন তারা এখনো অ্যাপল ও গুগলের অ্যাপ স্টোর থেকে পুনরায় ডাউনলোড করতে পারছেন না। মূলত আইনি জটিলতার কারণে অ্যাপটি এখনো অ্যাপল ও গুগল স্টোর থেকে ডাউনলোড করা যাচ্ছে না। সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা মালিকানাধীন টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা ৭৫ দিনের জন্য পিছিয়ে নির্বাহী আদেশে সই করেছেন। তবে আদেশটি আইনত বৈধ কিনা তা স্পষ্ট নয়।
টিকটক চালু রাখতে কোম্পানি ও এর অংশীদারদের বড় অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে না বলে ট্রাম্প আশ্বাস দেয়ার পর মাধ্যমটি আবার কাজ শুরু করেছে। তবে অ্যাপ স্টোরগুলোর কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি।


আরো সংবাদ



premium cement